কি যে বলেন আন্টি। এটা কীভাবে সম্ভব। এটা তো লজ্জার ব্যাপার। আমি এটা পারবোনা।
স্টুডেন্ট এর সুন্নাতে খৎনা(মুসলমানি) হবে। আন্টি দাওয়াত দিলো। গিয়ে দেখি ছাত্র ভয়ে কাঁপতেছে। আন্টি আমাকে বললেন, ওকে একটু বুঝাও।
আমি ওর পাশে গিয়ে বললাম,
- সিফাত; ভাই আমার, ভয়ের কিছু নেই এটা কাটতেই হয়। ব্যাথা পাওয়া যায়না।
- স্যার, আমার নুন্টু কাটলে আমি হিসু করবো কী দিয়ে?
- আরে বোকা! নুন্টু কাটবেনা। সামান্য একটু চামড়া কেটে ফেলবে উপর থেকে।
- আপনার কাটছে?
- হ্যাঁ আমারো কাটছে।
- কই দেখান তো? কতটুকু কাটছে আমি দেখবো।
আন্টি সামনে বসে আছে। ডাক্তার সাহেবও বসে আছেন। আমি এক মুহুর্তের মধ্যে 'থ' হয়ে গিয়েছি। এটা কী করে সম্ভব!
- চুপ করো। এটা দেখানো যাবেনা। আমি বড় হয়েছি। এটা লজ্জার ব্যাপার।
- তাহলে আমি কাটবোনা। আম্মু, আমি নুন্টু কাটবোনা। ডাক্তার আংকেল আপনি চলে যান।
অনেক বুঝিয়ে-সুঝিয়েও ওকে রাজি করানো যায়নি।
আন্টি আমাকে বললেন, বাবা তুমিও তো ছেলে মানুষ আমার ছেলেটাও ছেলে মানুষ। ওকে একবার দেখাও। দেখলেই ও বুঝতে পারবে।
আন্টির কথা শুনে আমার আকাশ থেকে ভেঙে পড়ার মত অবস্থা হলো।
- কি যে বলেন আন্টি। এটা কীভাবে সম্ভব। এটা তো লজ্জার ব্যাপার। আমি এটা পারবোনা।
আন্টি আমাকে রিকোয়েস্ট করা ছাড়তেই পারলেন না। ডাক্তার সাহেবও বললেন, তুমি তো সবে মাত্র অনার্সে। এখন এত লজ্জা কিসের। ওকে একবার দেখাও। ও কোনোমতে দেখে বুঝতে পারবে যে আসলে মুসলমানি মানে পুরো নুন্টু কাটা না।
আমি বসে রইলাম। আর বারবার নিজেকে ভৎর্সনা দিতে লাগলাম 'কেনো এই দাওয়াত খেতে এলাম' বলে।
লজ্জায় আমার মাথা কাটা যাচ্ছিলো। ঘরভর্তি মানুষ। স্টুডেন্ট এর খালামনি সদ্য এস এস সি পাশ করা মেয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি কি বলি এটা দেখার জন্যে তারা সবাই আমার মুখের দিকে চেয়ে আছে।
এই লজ্জার কাজ আমি করতে পারবোনা। একটা বাচ্চা ছেলের সামনে আমার ইজ্জতভ্রষ্ট হবে তা কখনোই আমি মেনে নিতে পারবোনা। তাই অনেক ভেবে বললাম।
- সিফাত, বিশ্বাস করো মুসলমানি করলে পুরো নুন্টু কেটে ফেলে। আমারটাও কেটে ফেলছে। কীভাবে দেখবা? নাই তো। ডাক্তার সাহেবকে জিজ্ঞেস করে দেখো। ওনারটাও নেই। এই বলে আমি চলে এলাম।
ও ভয়ে কান্না শুরু করে দিলো।
পরেরদিন ঐ বাসার পাশের আরেকটা টিউশনে যেতে গিয়ে দেখি সিফাতের হাতে লুঙি উঁচু করে ধরে রাখা।
বেচারা ডাক্তার হয়তো নিজের ইজ্জত উৎসর্গ করে দিয়েছে এই সিফাতের খৎনার জন্যে।
-উৎসর্গ
জহির রায়হান লিমন
*কালেক্টেড
কোন মন্তব্য নেই